বন্ধ মাসিক চালু করার উপায় - ১ দিনে মাসিক হওয়ার উপায়
বন্ধ মাসিক চালু করার উপায় - ১ দিনে মাসিক হওয়ার উপায়
আমাদের অনেকের সমস্যা হতে পারে যেমন মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া। চলুন আমরা জেনে নেই যে বন্ধ মাসিক চালু করার উপায় - ১ দিনে মাসিক হওয়ার উপায়। বন্ধ মাসিক (যেমন পিরিয়ড বন্ধ থাকা) পুনরায় চালু করার উপায় নির্ভর করে এটি কেন বন্ধ হয়েছে তার ওপর। চিকিৎসার ভাষায় একে বলা হয় অমেনোরিয়া। সাধারণত দুই ধরনের হয়:
- প্রাথমিক অমেনোরিয়া কখনও মাসিক শুরুই হয়নি।দ্বিতীয়িক অমেনোরিয়া আগে মাসিক হতো, কিন্তু ৩ মাস বা তার বেশি সময় ধরে বন্ধ।
- মাসিক বন্ধ হওয়ার কিছু সাধারণ কারণ হলো ।অতিরিক্ত ওজন কমে যাওয়া বা খুব কম ওজন। অতিরিক্ত মানসিক চাপ। অতিরিক্ত ব্যায়াম। হরমোনের সমস্যা (যেমন থাইরয়েড বা প্রোলাকটিনের সমস্যা)।পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS)। গর্ভাবস্থা,রক্তস্বল্পতা বা পুষ্টির অভাব।
বন্ধ মাসিক চালু করার উপায় - ১ দিনে মাসিক হওয়ার উপায় হলো সঠিক কারণ নির্ধারণ করা হলো:
- প্রথমে একজন গাইনকোলজিস্ট বা মেডিসিন বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে (যেমন ব্লাড টেস্ট, হরমোন টেস্ট, আলট্রাসোনোগ্রাফি)।
- ওজন ঠিক করা অতিরিক্ত কম বা বেশি ওজন থাকলে তা স্বাভাবিকের মধ্যে আনতে হবে। পুষ্টিকর খাবার খাওয়া পর্যাপ্ত প্রোটিন, শাকসবজি, ফল, আয়রন ও ভিটামিন যুক্ত খাবার খেতে হবে।
- মানসিক চাপ কমানো যোগব্যায়াম, মেডিটেশন বা রিল্যাক্সেশন টেকনিক কাজে আসতে পারে। হরমোন চিকিৎসা যদি হরমোনের কারণে বন্ধ হয়ে থাকে, তাহলে ডাক্তার প্রয়োজনে হরমোন থেরাপি বা ওষুধ দিতে পারেন (যেমন: প্রজেস্টেরন ট্যাবলেট বা কম্বাইন্ড পিল)।
- কিন্তু নিজের ইচ্ছায় কোনো ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।মাসিক বন্ধ থাকলে সবসময়ই অন্তত একবার ডাক্তার দেখানো জরুরি, কারণ এর পেছনে বড় কোনো শারীরিক সমস্যা লুকিয়ে থাকতে পারে।
- আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে মাসিক বন্ধ হয় কেন চলুন এটার বিস্তারিত জেনে নেই। সাধারণ কারণসমূহ ,গর্ভাবস্থা,মাসিক বন্ধ হওয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ। আগে মাসিক নিয়মিত হলে এবং হঠাৎ বন্ধ হলে প্রথমে প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে হবে। অতিরিক্ত শারীরিক বা মানসিক চাপ।
- পরিবার, পড়াশোনা বা কাজের চাপ। মানসিক ট্রমা। ওজন কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া। অতিরিক্ত ডায়েট বা ব্যায়াম করলে। বেশি মোটা হলেও (Obesity) মাসিক বন্ধ হতে পারে। হরমোনের সমস্যা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS)। থাইরয়েডের সমস্যা (হাই বা হাইপোথাইরয়ডিজম)। প্রোলাকটিন হরমোন বেড়ে যাওয়া।
অন্য রোগ বা শারীরিক সমস্যা যেমন
- ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা, টিউমার ইত্যাদি। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। কিছু মানসিক রোগের ওষুধ বা স্টেরয়েড। জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বন্ধ করা। হরমোনাল পিল বন্ধের পরও কিছু মাস মাসিক আসতে দেরি হতে পারে। কোন পরীক্ষা করতে হয়? প্রথমেই পরীক্ষা করতে হবে: প্রেগনেন্সি টেস্ট,হিমোগ্লোবিন (রক্তে আয়রন স্বাভাবিক কিনা)।
- থাইরয়েড টেস্ট (TSH),প্রোলাকটিন টেস্ট,পেলভিক আলট্রাসোনোগ্রাফি (PCOS বা অন্যান্য সমস্যার জন্য,ফিমেল হরমোন প্রোফাইল (যদি প্রয়োজন হয়)। বন্ধ মাসিক চালু করার উপায় পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। যেমন পুষ্টিকর খাবার খাওয়া (দুধ, ডিম, শাকসবজি, ফল, বাদাম, মাছ, মাংস)।পর্যাপ্ত পানি পান করা।
- এছাড়াওওষুধ ও চিকিৎসা (শুধু ডাক্তারের পরামর্শে) নিতে হবে :প্রজেস্টেরন বা হরমোনাল পিল (যেমন Medroxyprogesterone বা Combined Oral Contraceptive pills)। থাইরয়েড বা প্রোলাকটিনের সমস্যা থাকলে তার চিকিৎসা। PCOS থাকলে ওজন কমানো ও প্রয়োজনে মেটফরমিন জাতীয় ওষুধ।
কি খেলে মাসিক তাড়াতাড়ি হয়
আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে যে কি খেলে মাসিক তাড়াতাড়ি হয় এসব প্রশ্ন অনেকের মনে জাগতে পার। চলুন বন্ধ মাসিক চালু করার উপায় বিষয়ে বিস্তারিত জেনেনি। বন্ধ মাসিক চালু করার উপায় - ১ দিনে মাসিক হওয়ার উপায় হলো মাসিক (পিরিয়ড) ঠিক মতো চালু রাখতে বা নিয়মিত রাখতে কোনো নির্দিষ্ট খাবারই একা একা কাজ করে না, তবে কিছু পুষ্টিকর খাবার হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
সাধারণত এই ধরনের খাবার খেলে উপকার হয়:
- যেমন, সবুজ শাকসবজি, গাজর, বিট, কুমড়ো, ফলমূল (বিশেষ করে পেঁপে, আনার, কলা), ডিম, দুধ, বাদাম, মাছ, মুরগি। পেঁপে একটু বেশি উল্লেখ করা হয় কারণ এতে পুষ্টি আছে যা জরায়ুর রক্তপ্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করে।
- তবে, শুধু খাবার খেলেই মাসিক চালু হবে—এমনটা না। মাসিক বন্ধের পেছনে যেটা কারণ, সেটার চিকিৎসা করাটা সবচেয়ে দরকার।
তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ
আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ কি বিস্তারিত জেনে নেই ভালোভাবে। মেয়েদের ক্ষেত্রে মাসিক (period) সাধারণত প্রতি ২৮ দিন পরপর হয়, তবে ২১–৩৫ দিনের মধ্যে হলেও তা স্বাভাবিক ধরা হয়। কিন্তু অনেক সময় তারিখ অনুযায়ী (মানে, প্রতিবারের নির্দিষ্ট তারিখে)।
আরো পড়ুন: অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার উপায় ও গোড়া শক্ত করার উপায়
মাসিক না হতে পারে। এর কিছু সাধারণ কারণ নিচে দেওয়া হলো
- তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ:শরীরে ইস্ট্রোজেন, প্রজেস্টেরন বা অন্যান্য হরমোনের পরিবর্তনের জন্য। যেমন: থাইরয়েডের সমস্যা, প্রোলাকটিন হরমোন বেশি থাকা, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) ইত্যাদি।
- মানসিক চাপ বা স্ট্রেস: পড়াশোনা, চাকরি, পারিবারিক সমস্যা বা মানসিক দুশ্চিন্তার জন্য মাসিকের তারিখ পিছিয়ে যেতে পারে। বা ওজনের পরিবর্তন হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া। খুব বেশি ডায়েট বা বেশি এক্সারসাইজ। বন্ধ মাসিক চালু করার উপায় এই গুলার।
- অতিরিক্ত ব্যায়াম বা পরিশ্রম: খেলোয়াড় বা যারা অতিরিক্ত এক্সারসাইজ করে তাদের মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। বা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বা অন্য হরমোনাল ওষুধ পিল খাওয়া শুরু বা বন্ধ করলে মাসিকের রুটিন বদলে যেতে পারে।
- গর্ভাবস্থা: প্রথমে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে নিশ্চিত হতে হবে। বা যেমন ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা, অথবা অন্য কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগ।
- কখন ডাক্তার দেখাবেন?: যদি ৩ মাসের বেশি মাসিক না আসে। মাসিক খুব বেশি অনিয়মিত হয়। অনেক ব্যথা বা অন্য উপসর্গ হয়। অতিরিক্ত রক্তপাত বা একদমই রক্ত না আসে।
- কী করবেন?: প্রেগন্যান্সি টেস্ট করুন (যদি প্রয়োজন হয়)। হরমোন ও আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা করা দরকার। পুষ্টিকর খাবার খান, মানসিক চাপ কমান, পর্যাপ্ত ঘুমান।ওজন ঠিক রাখুন। প্রয়োজনে গাইনকোলজিস্টের পরামর্শ নিন।
মাসিক হওয়ার লক্ষণ
আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেনা যে মাসিক হওয়ার লক্ষণ চলুন সেটা জেনেনি কিভাবে মাসিক হওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়। মাসিক (পিরিয়ড) শুরু হওয়ার আগে ও সময়ে অনেক মেয়ের শরীরে কিছু লক্ষণ বা পরিবর্তন দেখা যায়। এগুলোকে প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিম্পটমস (PMS) বলা হয়। নিচে গুরুত্বপূর্ণ কিছু লক্ষণ উল্লেখ করা হলো:
- পেট বা তলপেটে ব্যথা (ক্যাম্পিং) অনেক মেয়ের পেটের নিচে ব্যথা বা টান ধরার মতো অনুভূতি হয়। স্তন ফোলা বা ব্যথা স্তন স্পর্শে সংবেদনশীল বা ব্যথা অনুভব হতে পারে।
- মেজাজ পরিবর্তন মন খারাপ, বিরক্তি, অতিরিক্ত আবেগপ্রবণতা ইত্যাদি হতে পারে।বা মাথাব্যথা বা শরীর ব্যথা অনেকের মাথাব্যথা বা পিঠে ব্যথা হয়।
- ব্লোটিং (গ্যাস বা পেট ফোলা) পেট ফোলা বা ভারী মনে হতে পারে। অতিরিক্ত ক্ষুধা বা বিশেষ খাবারের প্রতি আগ্রহ বিশেষ করে মিষ্টি বা লবণাক্ত খাবার খেতে ইচ্ছে করে।
- ত্বকের পরিবর্তন অনেকের মুখে ব্রণ দেখা দিতে পারে।ক্লান্তি বা ঘুম ঘুম ভাব — শরীর দুর্বল বা অবসন্ন লাগে।
- মাসিক শুরুর সময় এসব লক্ষণ ১–২ দিন আগে বা কখনো ১ সপ্তাহ আগেও শুরু হতে পারে এবং সাধারণত মাসিকের প্রথম ২–৩ দিন পর্যন্ত চলতে পারে।
- যদি লক্ষণগুলো খুব বেশি ঝামেলা করে বা অসহ্য হয়, তাহলে একজন গাইনোকলজিস্ট বা ডাক্তার এর সাথে পরামর্শ করা ভালো।
- মাসিক শুরুর আগে (PMS বা প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম) মাসিকের ৭–১০ দিন আগে থেকে নিচের লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে:
- তলপেটে ব্যথা বা চাপ হালকা থেকে মাঝারি টান ধরার মতো ব্যথা। স্তনে ব্যথা বা ফোলাভাব স্তন স্পর্শে সংবেদনশীল হয়ে যায়।
- মেজাজ খারাপ হওয়া মন খারাপ, অযথা রাগ বা দুঃখ, অস্থিরতা। অতিরিক্ত ক্ষুধা বা খাবারের ইচ্ছা বিশেষ করে চকলেট বা মিষ্টি খাবার খেতে ইচ্ছে করে।
- পেট ফোলা, গ্যাস অনেকে বলেন পেট ভারী লাগে। মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, কোমর ব্যথা। ত্বকের সমস্যা (ব্রণ ওঠা)।
- মাসিকের রক্তপাত শুরু হলে: তলপেটে ব্যথা থাকতে পারে, সাধারণত প্রথম ১–২ দিন বেশি হয়। শরীর দুর্বল বা ক্লান্ত লাগে। অনেকের রক্তপাত বেশি হলে মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে ডায়রিয়া বা বমিভাব হতে পারে।
- কখন ডাক্তার দেখানো দরকার: তলপেটে খুব বেশি ব্যথা হয়, ব্যথার জন্য স্কুল/কাজে যেতে সমস্যা হয়। রক্তপাত খুব বেশি (প্রতি ঘণ্টায় ১ প্যাড পরিবর্তন করতে হয়)।
- মাসিক ৩ মাস বা তার বেশি বন্ধ থাকে (যদি গর্ভাবস্থার সম্ভাবনা না থাকে)। মাসিক খুব অনিয়মিত বা হঠাৎ পরিবর্তন হয়। হিমোগ্লোবিন (রক্তের লোহিত কণিকা) কমে যায়, ফলে বেশি দুর্বলতা লাগে।
- কীভাবে উপশম করা যায়?: হালকা গরম পানি দিয়ে পেটের উপরে সেঁক। পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও পানি পান করা। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, যেমন শাক-সবজি, ফল, বাদাম। খুব প্রয়োজনে প্যারাসিটামল বা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথার ওষুধ খাওয়া।এই গুলার হলো বন্ধ মাসিক চালু করার উপায় - ১ দিনে মাসিক হওয়ার উপায় ।
দ্রুত মাসিক হওয়ার ব্যায়াম
আমরা অনেকেই মনে করি যে কিছু ব্যায়াম করলে দ্রুত মাসিক হতে পারে চলুন এটার বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নি ব্যায়াম করলে কি সত্যি দ্রুত মাসিক হয় বিস্তারিত আমরা ভালোভাবে জেনে নেই। প্রথমে একটা বিষয় পরিষ্কার করা দরকার শরীরের স্বাভাবিক হরমোনের কারণে মাসিক হয়,।
আরো পড়ুন: পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর সঠিক ঘরোয়া উপায়
কোনো ব্যায়াম করলে একদম দ্রুত মাসিক হয়ে যাবে এমনটা ঠিক না। তবে, কিছু হালকা ব্যায়াম আছে যা রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দিতে পারে, পেটের পেশি শিথিল করতে পারে এবং মাসিক শুরুর ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। যে ব্যায়ামগুলো সহায়ক হতে পারে সেগুলা নিচে দেওয়া হলো
- হালকা থেকে মাঝারি গতিতে হাঁটা বা দৌড়ানো রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
- বিশেষ করে কিছু আসন যেমন: ভুজঙ্গাসন (Cobra pose) তলপেটের পেশি টানটান করে। বালাসন (Child’s pose) পেটের উপর চাপ পড়ে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। পবনমুক্তাসন (Wind-relieving pose) পেটের গ্যাস ও অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে।
- হালকা স্ট্রেচিং: কোমর ও তলপেটের স্ট্রেচ করতে পারেন। মাইল্ড পেলভিক টিল্ট বা হিপ রোল। সাইকেল চালানো। পেট ও কোমরের পেশি সচল রাখে।
- যখন ব্যায়াম করা উচিত নয়: যদি আপনি দুর্বল বোধ করেন বা হিমোগ্লোবিন কম থাকে। অতিরিক্ত ব্যথা বা জ্বর থাকে। গাইনোকলজিস্ট নিষেধ করে থাকেন।
- অন্যান্য সহায়ক উপায়: হালকা গরম পানির সেঁক। উষ্ণ পানীয় (গরম দুধ, আদা-চা)। পর্যাপ্ত পানি পান করা। মানসিক চাপ কমানো (কারণ স্ট্রেসে মাসিক দেরি হতে পারে)।
পিরিয়ড না হলে কি খাওয়া উচিত
আমরা অনেকেই মনে করি পিরিয়ড না হলে কি খাওয়া উচিত চলুন এটার বিষয়ে আমরা বিস্তারিত ভালোভাবে জেনে নিন যে পিওর না হলে কি খাওয়া উচিত। পিরিয়ড (মাসিক) দেরি হলে বা বন্ধ হলে, প্রথমেই কারণটা জানা খুব জরুরি। কারণ, শুধু খাবার খেলেই পিরিয়ড শুরু হবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই।
তবুও, কিছু পুষ্টিকর খাবার আছে যা হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে, রক্ত সঞ্চালন ভালো রাখতে ও পিরিয়ড নিয়মিত রাখতে সহায়তা করে। সেই পুষ্টিকর খাবার গুলো নিচে ধাপে ধাপে দেওয়া হলো যেসব খাবার সহায়ক
- পেঁপে পেটের পেশি সক্রিয় করে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।কাঁচা পেঁপে বিশেষভাবে ভালো বলা হয়। আদা হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গরম আদা-চা বা আদার রস খেতে পারেন।
- ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল: কমলা, লেবু, আমলকি ইত্যাদি।ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।সবুজ শাক-সবজি আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ।রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে, পিরিয়ড নিয়মিত রাখতে সহায়ক।
- বাদাম ও বীজ (তিল, সূর্যমুখী বীজ): স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও হরমোন ব্যালান্সের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। হলুদ দুধ (গোল্ডেন মিল্ক)। প্রদাহ কমায়, রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে।
- যখন অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে: ৩ মাসের বেশি সময় পিরিয়ড বন্ধ থাকলে। প্রেগন্যান্সির সম্ভাবনা থাকলে। হঠাৎ করে পিরিয়ডের রক্তপাত খুব কমে গেলে বা হঠাৎ বেশি হয়ে গেলে।তলপেটে তীব্র ব্যথা বা অস্বাভাবিক স্রাব হলে।
- অন্যান্য পরামর্শ: নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন।পর্যাপ্ত পানি পান করুন। অতিরিক্ত মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন।পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিন। এইগুলাই হলো বন্ধ মাসিক চালু করার উপায় - ১ দিনে মাসিক হওয়ার উপায়।
অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করার উপায়
আমরা অনেকেই মনে করি অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত মাসিক করার উপায় আছে। চলুন এটার বিষয়ে আমরা ভালোভাবে বিস্তারিত জেনে নিই। অনিয়মিত মাসিক (Irregular period) নিয়মিত করতে হলে প্রথমে কারণটি জানা দরকার। নানা কারণে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে, যেমন:
- হরমোনের অসামঞ্জস্য (যেমন PCOS)।অতিরিক্ত মানসিক চাপ,থাইরয়েডের সমস্যা,অতিরিক্ত ব্যায়াম,কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ।
- মাসিক নিয়মিত করার জন্য কিছু প্রাকৃতিক উপায় ও পরামর্শ: হলো পুষ্টিকর খাবার খান (শাকসবজি, ফল, বাদাম, প্রোটিন) প্রসেসড ফুড, অতিরিক্ত মিষ্টি বা ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন: অতিরিক্ত ওজন বা খুব কম ওজন মাসিকের সমস্যার অন্যতম কারণ। পমেডিটেশন, ধ্যান বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন সহায়ক হতে পারে।র্যাপ্ত বিশ্রাম নিন এবং মানসিক চাপ কমান।
- প্রয়োজন হলে চিকিৎসা নিন: যদি মাসিক ৩ মাসের বেশি বন্ধ থাকে বা অতিরিক্ত অনিয়মিত হয়, একজন গাইনোকলজিস্টের পরামর্শ নিন। হরমোনাল ইমব্যালান্স থাকলে ডাক্তার বিশেষ ওষুধ বা হরমোন থেরাপি দিতে পারেন।
- কিছু প্রাকৃতিক উপাদান (সাবধানতার সাথে): আদা, দারুচিনি, হলুদ, গুড় ইত্যাদি অনেকেই ব্যবহার করেন, তবে এগুলো প্রমাণিত চিকিৎসা নয়। অতএব, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এগুলো বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়।
- কখন ডাক্তার দেখাবেন?: ৩ মাসের বেশি মাসিক বন্ধ থাকলে, খুব বেশি রক্তক্ষরণ হলে।মাসিকের সাথে তীব্র ব্যথা বা অন্য কোনো অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখা দিলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। এই গুলার হলো বন্ধ মাসিক চালু করার উপায়।
- অনিয়মিত মাসিকের সম্ভাব্য কারণ হলো: হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা (কম বা বেশি কাজ করা)।প্রোল্যাক্টিন হরমোনের সমস্যা,পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS)।
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা টেনশন: মানসিক চাপ শরীরের হরমোনকে প্রভাবিত করে। ওজন খুব বেশি বা খুব কম হওয়া। অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম বা অতিরিক্ত ব্যায়াম। জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি বা অন্য হরমোনাল ওষুধ। অন্য রোগ বা সংক্রমণ।
- কীভাবে নিয়মিত করা যায়?: প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া উপায়সঠিক পুষ্টি মেনে চলা শাকসবজি, ফল, প্রোটিন, বাদাম, দুধ, ডিম ইত্যাদি বেশি খাওয়া। খুব বেশি ফাস্টফুড, কোমল পানীয় বা মিষ্টি না খাওয়া।
- নিয়মিত হালকা ব্যায়াম:প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, যোগব্যায়াম বা হালকা ফিটনেস। পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম প্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুমানো। মানসিক চাপ কমানো মেডিটেশন, শ্বাসের ব্যায়াম, প্রিয় কাজ করা।
- চিকিৎসা পদ্ধতি: হরমোনাল ইমব্যালান্স থাকলে ডাক্তার প্রয়োজনীয় টেস্ট (যেমন থাইরয়েড, প্রোল্যাক্টিন, USG ইত্যাদি) করিয়ে হরমোনের ওষুধ দিতে পারেন। পলিসিস্টিক ওভারি থাকলে ওজন কমানোর এবং নিয়মিত ঔষধের পরামর্শ দেন। কখনও কখনও গর্ভনিরোধক বড়ি দেওয়া হয় মাসিক নিয়মিত করার জন্য।
- যখন অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে:৩ মাস বা তার বেশি সময় মাসিক না হলে খুব বেশি বা খুব কম রক্তক্ষরণ হলে তীব্র ব্যথা বা অস্বাভাবিক রক্তের রং/গন্ধ হলে অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। এই গুলা হলো বন্ধ মাসিক চালু করার উপায়।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url