তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ ও সমাধান এর বিস্তারিত জানুন

প্রিয় পাঠক নিচে তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ ও সমাধান এর বিস্তারিত জানুন অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণে আমাদের অনেক ধরনের চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খায়। এর জন্য নিচ থেকে সকল ধরনের চিন্তার সমাধান পান 
তারিখ অনুযায়ী-মাসিক-না-হওয়ার-কারণ-ও-সমাধান-এর-বিস্তারিত-জানুন
নিচে অনিয়মিত মাসিকের সকল সমস্যা ও সমাধান এর পরামর্শ দেওয়া রয়েছে।
সূচিপত্র: তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ ও সমাধান   

তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ ও সমাধান এর বিস্তারিত জানুন

একজন মেয়ে হিসেবে দৈনন্দিন জীবনে আমরা শরীর বৃত্তিও নানা সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকি। এসকল সমস্যার মধ্যে মূল যে সমস্যা টি আমাদের চিন্তিত করে তা হচ্ছে - মাসের নির্দিষ্ট তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ কি বা ঋতুস্রাব অথবা ঋতুচক্র না হ‌ওয়া। সময় মতো বা তারিখ অনুযায়ী মাসিক শুরু না হলে কী করা উচিত এবং কেনো এই সমস্যা হয় তা নিয়ে আলোচনা করবো।

একজন সুস্থ স্বাভাবিক মেয়ের মাসের ২৮/৩০/৩২ দিন অন্তর অন্তর মাসিক বা ঋতুচক্র হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু সময় দেখা যায় হঠাৎ করে নির্দিষ্ট সময়ের আগে অথবা পরে হয়ে যায়। এটি হলে আমরা অনেক দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই। মূলত মেয়েদের শরীরের হরমোনাল ইমব্যালেন্স এর কারনে এমনটা হয়ে থাকে। যেসব কারণে অনিয়মিত মাসিক হয় তাহলে:
  • ওজন বেড়ে যাওয়া: আপনার যখন শরীরের ওজন বেড়ে যাবে তখন আপনার অনিয়মিত মাসিক হওয়াটা স্বাভাবিক। বেশিরভাগ সময়তেই অনিয়মিত মাসিক হয় ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে।
  • চিন্তা বা টেনশন: আপনি যখন চিন্তা বা টেনশন করেন তখন আপনার শরীরে অনেক ক্ষতি হয়। এর জন্য যখন আপনার শরীর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় তখন আপনার অনিয়মিত মাসিক এর সমস্যা দেখা দেয়।
  • অপরিচ্ছন্নতা: শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিকমতো পরিষ্কার না করে অগোছালো ভাবে জীবন যাপন করার মাধ্যমে অনিয়মিত মাসিক এর সমস্যা বেড়ে যায়। যখন আপনি অপরিষ্কার থাকেন এবং আপনার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পরিষ্কার থাকে না সেখান থেকে অনিয়মিত মাসিকের সূত্রপাত হয়।
  • দূষিত পরিবেশ: আপনি যখন দূষিত পরিবেশের মধ্যে জীবন যাপন করবেন। তখন আপনার মাসিক অনিয়মিত হবে কেননা দূষিত পরিবেশে থাকার ফলে আপনার শরীরে অনেক ধরনের ক্ষতি হবে। এবং সেই ক্ষতি আপনার শরীর ঠিকমতো না মানিয়ে নিতে পারার কারণে অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে।
  • খাওয়া- দাওয়া: অতিরিক্ত পরিমাণে বাইরের খাবার খাওয়ার মানতে হবে অনিমিত মাসিক হয়ে থাকে। এবং আপনি যখন বেশি পরিমাণে চিনি খাওয়াবেন এবং ফাস্টফুড খাবেন বা কোমল পানিও খাবেন তখন আপনার অনিয়মিত মাসিক হবে।
  • সঠিক খাবার: আমরা যখন পুষ্টিকর খাবার কম খাব তখন আমাদের শরীরে পুষ্টির অভাব হবে। যে কারণে অনিয়মিত মাসিক হতে পারে। আবার আমরা যদি বেশি করে খেয়ে ফেলে দিয়ে আমাদের ওজন বেড়ে যায়। এর ফলেও আমাদের নিয়মিত মাসিক হতে পারে।
তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ গুলোর পরিবর্তনের কারণে অনেক সময় মেয়েদের শরীরে পর্যাপ্ত হরমোন উৎপন্ন হয় না। যার কারণে মাসিক দেরিতে হয় । আবার শরীর ফুলে যাওয়া বা ওজন বৃদ্ধির সাথেও মাসিক দেরিতে বা দ্রুত হ‌ওয়ার সম্পর্ক রয়েছে।

তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ লক্ষ্য করে ও সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রত্যেকটি মেয়ের উচিত। তার শরীরের যত্ন নেওয়া, ঠিকমতো খাবার খাওয়া ও কর্মজীবনে সবকিছু ব্যালেন্স রাখা। আর তাছাড়া এতেও সমাধান না হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ

মেয়েদের মাসিক হয় প্রতি মাসিকের পরবর্তী ২৮-৩২ দিনের মধ্যে তবে অনেক সময় এর ব্যতিক্রম হয়। যেমন হঠাৎ করে ১ মাসের পরিবর্তে ২-৩ মাস কেটে যায়। এই সময়তে আমরা অনেক পরিমানে ভয় পেয়ে যাই আমরা কোন সমাধান খুঁজে পাইনা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এমন টা হ‌ওয়ার কারন কী !

আমরা অনেকেই আছি যারা ভেবে থাকি ১ মাসের মধ্যে মাসিক না হলে সে গর্ভধারণ করেছে। এটি ভুল ধারণা কারন -
  • অনেক সময় মেয়েদের ওভারিতে সিস্ট হ‌ওয়ার কারনে মাসিক থেমে যায়। যে কারণে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই এটি ঠিক হয়ে গেলেই আপনার মাসিকের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
  • আপনার যদি হঠাৎ করে ওজন বেড়ে যায় তবে আপনার কিছু সময়ের জন্য অথবা একমাস এর জন্য মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
  • শরীরের হরমোন গুলো অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে গেলে ঋতুচক্র এলোমেলো হয়ে যায়। যে কারণে কোন কোন মাসে আমাদের হঠাৎ করেই মাসিক বন্ধ হয়ে যায় এবং ঠিকমতো মাসিক হতে চাই না।
২৮-৩৫ দিন পর্যন্ত যদি মাসিক না হয় তবে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করাটা জরুরী। এবং অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলাটা উত্তম । যেহেতু মেয়েদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক কিছু সামলাতে হয় তাই নিজেদের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত এতে মাসিক ঠিক থাকবে।

এই বিষয় নিয়ে আপনাকে কোন ধরনের চিন্তাও করতে হবে না। এর জন্য প্রথমে আপনি আপনার স্বাস্থ্যের উপরে নজর দেন।

অনিয়মিত মাসিক হলে করনীয় কি

অনিয়মিত মাসিক হলে এর নির্দিষ্ট কোন সমাধান নেই। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করলে ঠিক হয়ে যায়। আবার ঘরোয়া কিছু উপায়েও এটি স্বাভাবিক করা সম্ভব।

লেবুর রসের সঙ্গে দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে অনেক টা উপসম পাওয়া যায়। এছাড়াও পেটের ব্যাথা অনেক টাই কমে আসে। অনিয়মিত মাসিক হলে নানা রকম ব্যায়াম এর মাধ্যমে এটি ঠিক করা যায়। এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের অনেক মতামত রয়েছে এ বিষয়ে।

হঠাৎ পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার কারণ

হঠাৎ করে পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার মানে আমরা অনেক সময় মনে করি যে গর্ভধারণের কারণে এমনটা হচ্ছে। তবে হঠাৎ পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার কারণ আরো অন্যান্য রয়েছে। মানসিক চাপের কারণে অনেক মেয়েদের ঋতুস্রাব পিছিয়ে যায় এটি হচ্ছে মূল কারন গুলোর একটি। 
হঠাৎ-পিরিয়ড-বন্ধ-হওয়ার-কারণ-জানুন
আমাদের অনেকেরই এটা জানা নেই যে - পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম হরমোনের মাত্রা ওঠানামায় হঠাৎ পিরিয়ড বা মাসিক থেমে যায়। পিরিয়ড বন্ধ হওয়া প্রায় মেয়েদের জন্যই অজানা একটি কারণ । থাইরয়েড থাকলেও মেয়েদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। 

এটির জন্য মহিলাদের পিরিয়ড বা মাসিক অনিয়মিত হয়ে যায় ও হঠাৎ করে থেমে যায়।মেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ড এর নিয়মিত করনের জন্য শরীর চর্চা ও স্বাস্থ্য সম্মত খাবার গ্রহণ করার কোন বিকল্প নেই। তাই প্রত্যেকটি মেয়ের উচিত নিজেদের শরীর যত্ন নেওয়া ও মনকে প্রফুল্ল - সতেজ রাখ ‌। এটিই হলো মেয়েদের সুস্থতার মূল বিষয়।

পিরিয়ড না হলে কি খাওয়া উচিত

তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারন রয়েছে। এটি স্বাভাবিক করতে অনেক উপায় অবলম্বন করা সম্ভব। চিকিৎসা বিজ্ঞান এ এখন পিরিয়ড নিয়মিত করনের জন্য অনেক ঔষধ আবিষ্কার করা হয়েছে। তবে সকল ওষুধ খাওয়ার মাধ্যমে পরবর্তীতে অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। 

এর জন্য প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া কিছু উপায় বা কিছু খাওয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের পিরিয়ড নিয়মিত করতে পারব। এর জন্য যা যা খাওয়া প্রয়োজন তা হল:

  • পেঁপে: যদি আপনার পিরিয়ড অনিয়মিত হয় তাহলে আপনি আপনার পিরিয়ডের দুই থেকে তিন দিন আগে থেকে পেঁপে খাওয়া শুরু করবেন। পেঁপে খাওয়ার মাধ্যমে আপনার পিরিয়ড নিয়মিত হবে।
  • পার্সলে: পার্সলে এটি চায়ের মতো করে তৈরি করতে হয় একটি কাপের মধ্যে ফুটন্ত গরম পানি নিয়ে এবং কয়েক চামচ পার্সলে সেই কাপে ডুবিয়ে রাখুন ৫ মিনিট ধরে। এবং তা চায়ের মতো করে খান। এটিতে রয়েছে ভিটামিন সি। তবে এটি কিডনির সমস্যা ও গর্ভধারী মহিলাদের জন্য নয়। যাদের শিশু তাদের স্তনের দুধ খায় তাদের এটি খাওয়া উচিত নয়।
  • ভিটামিন সি: পিরিয়ড অনিয়মিত হলে আমাদের বেশি করে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত যেমন টমেটো শাক-সবজি পেঁপে বেড়ে কমলালেবু ইত্যাদি বেশি বেশি খাওয়া উচিত।
  • চা ও কফি: রেগুলার এড থেকে দুই কাপ চা বা কফি খাওয়ার মাধ্যমে পিরিয়ড নিয়মিত হয়ে এমনটাই অনেকে দাবি করে থাকেন তবে এটির কোনো গবেষণায় পাওয়া যায়নি।
  • লেবুর রসের সঙ্গে দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে মাসিক ঠিক হয়ে যায়।
এগুলো খাওয়ার মাধ্যমে আশা করা যায় নিয়মিত পিরিয়ড হবে এবং এগুলো প্রমাণিত।

ঘন ঘন মাসিক হওয়ার কারণ কি

অনেক সময় মেয়েদের মাসে ২/৩ বার মাসিক হয়ে থাকে। এমন ঘন ঘন মাসিক হ‌ওয়ার অনেক কারন রয়েছে। জন্ম বিরতি করন ঔষধ সেবন করলে মাসে একাধিকবার মাসিক হয়। এমার্জেন্সি পিল নো রিস্ক বা এরকম ধরনের পিল খেলে একাধিকবার মাসিক হয় । 
আবার শরীরের ওজন বেড়ে গেলে বা কমে গেলে মাসে একাধিকবার মাসিক হয় । নিত্যদিনের খাবার তালিকা হঠাৎ করে পাল্টে গেলে বা পেটে আঘাত / চাপের কারনেও মাসে একাধিকবার মাসিক হয়।

অনিয়মিত মাসিক হলে কি বাচ্চা হয়

তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ এ অনেক  মেয়েদের চিন্তার শেষ নেই। এটা শুধু আপনি একা নন প্রতি ১০০ জন নারীর ৫০ জন‌ই এমন পরিস্থিতিতে পরেন। স্বাভাবিক ভাবেই একটি মেয়ের যখন অনিয়মিত মাসিক হয় তখন তার প্রধান চিন্তা হয় বাচ্চা হ‌ওয়া নিয়ে। অনিয়মিত মাসিক হলে পরবর্তীতে তার গর্ভে সন্তান আসবে কিনা এটি বড় একটি চিন্তা। 
অনিয়মিত-মাসিক-হলে-কি-বাচ্চা-হয়
PCOS-এর মতো অবস্থা যা অনিয়মিত পিরিয়ড সৃষ্টি করে। তাও ডিম্বস্ফোটন এবং ডিমের গুণমানকে প্রভাবিত করতে পারে, যা গর্ভধারণকে আরও কঠিন করে। অনিয়মিত মাসিক হয় মূলত অতিরিক্ত টেনশন, ঠিক মতো খাবার না খাওয়া , নিত্যদিনের কর্ম পরিবর্তনের জন্য, জন্ম বিরতি পিলের জন্য ইত্যাদি কারণে। 

এতে বাচ্চা না হওয়া বা বন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার কোন চিন্তা নেই। কারন পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারলে স্বাভাবিক ভাবেই গর্ভধারণ হয়ে যাবে।

আমাদের পরামর্শ

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমরা তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ ও সমাধান এর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আপনার যদি কোন ধরনের প্রশ্ন বা কোথাও যদি বুঝতে সমস্যা হয়ে থাকে তবে অবশ্যই আমাদের জানাবেন।

তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ এ আমাদের তেমন কোন চিন্তার কারণ নেই। আমরা যদি ওপরে দেওয়া সকল তথ্য অনুযায়ী জীবন যাপন ও খাদ্য ব্যবস্থা সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারে তাহলে আমাদের এই সমস্যা হবে না। এবং যদি আমাদের অতিরিক্ত পরিমাণে এ ধরনের সমস্যা হয় তবে অবশ্যই আমরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিব। সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
NJ ONE FIRE 360
NJ ONE FIRE 360
একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট ও NJ ONE FIRE 360 ব্লগের এডমিন। তিনি অনলাইন ইনকাম, ব্লগিং, SEO, টেকনোলজি ও ডিজাইন নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করেন।