নেক সন্তান লাভের দোয়া - দ্রুত সন্তান লাভের দোয়া
আল্লাহ তালার কাছে নেক সন্তান লাভের দোয়া করার মাধ্যমে আপনি আল্লাহর সন্তুষ্টি
অর্জন করে খুব দ্রুতই সন্তান লাভ করতে পারেন। এবং দ্রুত সন্তান লাভের দোয়া ও
ইবাদত সম্পর্কে জেনে নিন।
সূচিপত্র: নেক সন্তান লাভের দোয়া - দ্রুত সন্তান লাভের দোয়া
নেক সন্তান লাভের দোয়া - দ্রুত সন্তান লাভের দোয়া
একটি সন্তান জন্ম দেওয়া এবং একটি সন্তান লাভ করা আমাদের জন্য অনেক খুশি এবং
আনন্দের বিষয়। সন্তান হলো আল্লাহ তাআলার অনেক বড় একটি নিয়ামত। সন্তান
দেওয়ার একমাত্র মালিক হলেন আল্লাহ তায়ালা। তিনি যাকে ইচ্ছা করেন তিনি তাকে
সন্তান দান করেন আবার যাকে ইচ্ছা করেন তাকে চিরস্থায়ী সন্তান না দেয়া থেকে
বিরত থাকেন।
আল্লাহ তায়ালাই যাকে চান তাকে পুত্র সন্তান দান করেন আবার যাকে চান তাকে কন্যা
সন্তান দান করেন। আবার কখনো কখনো দেখা যায় আল্লাহ তাআলা যাকে চান তাকে পুত্র
এবং মেয়ে সন্তান উভয় দান করেন। এর জন্য সন্তান লাভের জন্য আমাদের অবশ্যই
আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া ও সন্তান লাভের আমলগুলো করতে হবে।
নেক সন্তান লাভের দোয়া করে আমরা আল্লাহকে রাজি-খুশি করতে পারি এবং আল্লাহর কাছ
থেকে সন্তান লাভ করতে পারি। নেক সন্তান লাভের দোয়া আমরা অবশ্যই নিয়মিত এবং
আল্লাহর ইবাদতের পরে এবং যেকোনো সময় করতে। অনেক সময় আমাদের অনেকেরই সন্তান
হতে সমস্যা হয়ে থাকে।
যে কারণে আমাদের দ্রুত সন্তান লাভের দোয়া করা উচিত। দোয়া এবং আল্লাহর ইবাদত
করার মাধ্যমে আল্লাহকে রাজি-খুশি করে আমরা আল্লাহর নিকট হতে সন্তান লাভ করতে
পারি যদি আল্লাহ চান তবেই আমাদের সন্তান হবে। দ্রুত সন্তান লাভের দোয়া ও নেক
সন্তান লাভের দোয়া হিসেবে আমরা এই দোয়াটি পড়তে পারি।
(رَبِّ لَا تَذَرۡنِیۡ فَرۡدًا وَّ اَنۡتَ خَیۡرُ الۡوٰرِثِیۡنَ)
উচ্চারণ: রাব্বি লা তাযারনি ফারদান ওয়া আনতা খাইরুল ওয়ারিসিন।
অর্থ: হে আমার পালনকর্তা! আমাকে একা রেখ না। তুমি তো উত্তম ওয়ারিশ। (সুরা
আম্বিয়া, আয়াত: ৮৯)
হযরত জাকারিয়া (আ. )নিঃসন্তান ছিলেন। তিনি একদিন হঠাৎ করে দেখতে পেলেন আল্লাহ
তা'আলা কোন ধরনের মৌসুম ছাড়াই হযরত মারিয়াম (আ.) রিজিক হিসেবে ফলের ব্যবস্থা
করে দিয়েছেন। এমন ধরনের ঘটনা দেখে জাকারিয়া (আ.) এর মনের মধ্যে সুন্দর লাভের
জন্য আকাঙ্ক্ষা জেগে ওঠে।
এই আকাঙ্ক্ষা থেকে তিনি আল্লাহুতালার কাছে উপরের দোয়াটি করেন। এবং তারপরে
আল্লাহ তাআলা তার দোয়া কবুল করেন। হযরত জাকারিয়া (আ.) এই দোয়া করেছিলেন
বৃদ্ধ বয়সে। এবং এই দোয়া কবুল হয়েছিল বৃদ্ধ বয়সে এবং আল্লাহ তাআলা তাকে
বৃদ্ধ বয়সে সন্তান দান করেন।
তাই বোঝা যায় আল্লাহ তায়লা চাইলে বৃদ্ধ বয়সেও কাউকে সন্তান দান করতে
পারেন। যে কারণে আল্লাহ তায়ালার ওপর বিশ্বাস রেখে আমাদের সন্তানের জন্য
চেষ্টা করতে হবে এবং আল্লাহ তাআলার ইবাদত করতে। এবং নেক সন্তান লাভের দোয়া
করতে হবে।
আমরা এতক্ষন নেট সন্তান ও দ্রুত সন্তান লাভের দোয়া সম্পর্কে জানলাম নিচে আরো
কয়েক ধরনের উপায়ে সন্তান লাভের দোয়া জানবো।
যমজ সন্তান লাভের দোয়া
আমাদের অনেকেই ইচ্ছে হয় একসাথে জমজ সন্তান লাভের যে কারণে আমরা যমজ সন্তান
লাভের দোয়া করার মাধ্যমে জমজ সন্তান লাভ করতে পারি। এবং যমজ সন্তান লাভের
দোয়া করতে পারি আমরা স্বাভাবিকভাবে। তবে জমজ সন্তান লাভের জন্য নির্দিষ্ট
কোন দোয়া খুঁজে পাওয়া যায়নি।
জমজ সন্তান লাভের জন্য আমরা অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে পারি এবং
আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারি। এবং আমরা যদি এমনভাবে দোয়া করি যে আল্লাহ
তা'আলা আপনি আমাকে একজন নেক সন্তান দান করুন এবং একসাথে দুটো সন্তান দান
করুন।
অথবা আপনি আপনার মনের মত করে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারেন। তবে জমজ
সন্তানের নির্দিষ্ট কোন দোয়া নেই।
সুস্থ ও সুন্দর সন্তান লাভের দোয়া
সুস্থ ও সুন্দর সন্তান লাভ করা আল্লাহর অনেক বড় একটি নিয়ামত কেননা সুস্থতা
ও সৌন্দর্য আল্লাহর আরও একটি বড় নিয়ামত। অনেক সময় অনেকের সন্তান এর শরীরে
অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয় আবার অনেকের সন্তানের শরীরে অথবা শারীরিক অথবা
মানুষের সমস্যা হয়ে জন্ম নেয়।
আমরা আল্লাহর কাছে সুস্থ ও সুন্দর সন্তান এর জন্য দোয়া করতে পারি এবং
আল্লাহকে রাজি-খুশি করিয়ে আমরা সুন্দর সন্তান লাভ করতে পারি। এবং সুস্থ ও
ভালো সন্তানের জন্য এই দোয়াটি করতে পারি।
رَبِّ هَبْ لِي مِن لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ
الدُّعَاء
উচ্চারণ‘রাব্বি হাবলি মিল্লাদুনকা যুরিরয়্যাতান ত্বাইয়্যিবাহ, ইন্নাকা সামিউদ
দুআ’
অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার পক্ষ থেকে আমাকে পূতপবিত্র সন্তান দান
করো। নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা কবুলকারী।’ (সুরা আলে ইমরান: ৩৮)
কন্যা সন্তান লাভের দোয়া
আল্লাহ তাআলা আমাদের চাইলে কন্যা সন্তান দান করতে পারেন আবার আল্লাহ তাআলা
তাইলে আমাদের পুত্র সন্তান দান করতে পারেন। আল্লাহু তাআলা চাইলে আমাদের
সন্তান দান নাও করতে পারেন। এতে আমাদের হতাশ হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
আল্লাহ তালার কাছে আমাদের অবশ্যই আমাদের মনের ইচ্ছা এবং আমাদের যা প্রয়োজন তা
নিয়ে দোয়া করা উচিত। আমাদের জন্য যদি আল্লাহ তাআলার সেটি ভাল মনে হয় তবে
আল্লাহতালা অবশ্যই আমাদের ছেলেটি দান করবেন। যে কারণে আমাদের যদি কন্যা সন্তান
প্রয়োজন হয় তবে আল্লাহ তায়ালার কাছে আমাদের কন্যা সন্তানের জন্য দোয়া করা
উচিত।
নেক সন্তান লাভের দোয়া করা উচিত। আমাদের যদি শুধু বারবার পুত্র সন্তান হয় তবে
আমাদের আল্লাহর কাছে কন্যা সন্তানের জন্য দোয়া করা উচিত কন্যা সন্তান লাভের
জন্য যে দোয়া করবেন: সন্তান লাভের জন্য যে সকল দোয়া আপনি করবেন সে সফল
দোয়ায়ে আপনি কন্যা সন্তানের জন্য করতে পারেন।
তবে আল্লাহ তা'আলা যাকে খুশি তাকে কন্যা সন্তান দান করবেন এবং আল্লাহ তাআলার
যাকে খুশি তাকে আল্লাহ তায়ালা পুত্র সন্তান দান করবেন। আপনি আল্লাহর কাছে নেক
সন্তান দান চাইতে পারেন তবে আল্লাহর কাছে মোনাজাতে অথবা দোয়া করে কন্যা সন্তান
চাইতে পারেন
তবে আল্লাহ তা'আলা যদি মনে করে কন্যা সন্তান আপনার জন্য ভালো কল্যাণ বয়ে
আনবে তবে আল্লাহ তা'আলা আপনাকে কন্যা না সন্তান দান করবেন। আর যদি আল্লাহ
তায়ালা মনে করেন আপনার জন্য কন্যা সন্তান কল্যাণকর নয় তবে আল্লাহ তাআলার
এটি থেকে বিরত থাকবেন। কেন আল্লাহ তাআলা সব সময় তার বান্দার ভালো করেন।
পুত্র সন্তান লাভের কৌশল
পুত্র সন্তান লাভের জন্য অবশ্যই আল্লাহ তাআলার উপরের বিশ্বাস রাখতে হবে।
কেননা আল্লাহ তা'আলা আমাদের পুত্র সন্তান দান করেন আল্লাহ তা'আলা আমাদের
পূর্ণ সন্তান দান করেন। আমাদের পুত্র সন্তান অথবা কন্যা সন্তান দান করার জন্য
আল্লাহ তাআলা যথেষ্ট।
তবে আমরা চাইলে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে
পারে এবং আমাদের খাদ্য অভ্যাস এর পরিবর্তন করতে পারি। এবং আল্লাহ তায়ালার
ইবাদত করতে পারি যেমন বেশি বেশি সদকা করা বেশি বেশি নামাজ পড়া বেশি বেশি ইবাদত
করা।
আল্লাহ তাআলা রাজি খুশি করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্টি অর্জন
করতে পারি এবং আমাদের দোয়া কবুল করতে পারেন আল্লাহ তাআলা। তাই আল্লাহর কাছে
আমরা ক্ষুদ্র সন্তানের জন্য এই দোয়াটি করতে পারি:
رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ
উচ্চারণ : রাব্বি হাবলি মিনাস সলেহিন।
অর্থ : হে আমার প্রভু! আমাকে এক সৎপুত্র দান করুন।’ (সুরা সাফফাত, আয়াত :
১০০)
আমরা যদি আল্লাহর কাছে ভালোভাবে চাইতে পারি এবং আল্লাহকে রাজি খুশি করাতে
পারি তবে আল্লাহ তা'আলা অবশ্যই আমাদের পুত্র সন্তান দান করবেন।
কন্যা সন্তান নিয়ে কোরআনের উক্তি
আল্লাহ তায়ালা কোরআনের মাধ্যমে নারীদের সবসময় উঁচু স্থানে রেখেছেন এবং অনেক
বেশি সম্মান করেছেন। আল্লাহ তাআলার কোরআন নাজিল না হওয়ার পূর্বে জাহেলী
যুগের নারীদের অনেক বেশি অত্যাচার করা হতো। জাহেলী যুগে কন্যা সন্তানকে অনেক
বেশি অভিসার মনে করা হতো।
এর জন্য জাহেলী যুগের যদি কন্যা সন্তান জন্ম নিতো তবে তাকে জীবন্ত মাটিচাপার
দিয়ে মেরে ফেলা হতো। যে কারণে এ সকলের কিছুর বিপ্লব ঘটে কোরআন নাযিল হওয়ার
পরে। আল্লাহ তাআলা কন্যা সন্তান এর বিষয়ে অনেক ভালো ভাবে উক্তি দিয়েছেন যে:
যে ব্যক্তি তিনটি কন্যা সন্তান ভালোভাবে এবং কষ্ট ও ধৈর্যের সাথে লালন-পালন
করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম কন্যা সন্তান নিয়ে উক্তি দিয়েছেন যে: যে
ব্যক্তি কন্যা সন্তান লালন পালন করবে এবং ভালোভাবে তার ভরণপোষণ এবং বিয়ের
ব্যবস্থা করবে। আমি সেই ব্যক্তির সঙ্গে জান্নাতে একসঙ্গে থাকব। যেমনভাবে একটি
হাতের দুটো আঙ্গুল একসাথে থাকে।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url